জাগো দেশ, ডেস্কঃ বিশাল জনসংখ্যার দেশ ভারত। কিন্তু করোনা ভাইরাসের পরীক্ষার জন্য তাদের পর্যাপ্ত কিট নেই। যা নিয়ে চলছিলো সমালোচনা। শেষপর্যন্ত তা পরিবর্তন হতে চলেছে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের এক নারী বিজ্ঞানী করোনা ভাইরাস পরীক্ষার কিট তৈরি করেন। সন্তান প্রসবের ঘণ্টাখানেক
আগে তিনি কিটটি সরবরাহ করেন। এই নারী বিজ্ঞানীর নাম মিনাল দাখেভে
ভোসলে। তিনি ভারতের পুনের মাইল্যাবের গবেষণা ও উন্নয়ন প্রধান। একজন ভাইরোলজিস্ট। ভাইরাস নিয়ে কাজ করেন। গত বৃহস্পতিবার করোন ভাইরাস পরীক্ষার এই কিট প্রথম বাজারে ছাড়ে মাইল্যাব। প্রথম চালানে পুনে, মুম্বাই, দিল্লি, গোয়া ও বেঙ্গালুরুর ডায়াগনস্টিক ল্যাবগুলোতে ১৫০টি কিট পাঠানো হয়েছে। মাইল্যাবের চিকিৎসাবিষয়ক পরিচালক গৌতম ওংকহেডে শুক্রবার বিবিসিকে বলেন, আমাদের কিট উৎপাদন ইউনিট কাজ করে যাচ্ছে। দ্বিতীয় চালানটি সোমবার বাজারে ছাড়া হবে। মাইল্যাব এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি ও সি এবং অন্যান্য রোগের পরীক্ষার জন্য কিট বানিয়ে থাকে। তারা এক সপ্তাহে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য এক লাখ কিট সরবরাহ করতে পারবে। প্রয়োজনে সপ্তাহে দুই লাখ কিট দেওয়ার সক্ষমতা তাদের রয়েছে বলে
জানানো হয়েছে। মাইল্যাবের একেকটি কিট দিয়ে ১০০টি নমুনা পরীক্ষা করা যাবে। প্রত্যেক কিটের দাম পড়বে এক হাজার ২০০ রুপি। এমন একেকটি কিট
বিদেশ থেকে চার হাজার ৫০০ রুপি দিয়ে কিনেছে ভারত। মাইল্যাবের গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের প্রধান মিনাল ভোসলে বলেন, আমদানি করা কিটগুলো দিয়ে করোনা ভাইরাসের পরীক্ষার ফল পেতে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা সময় লাগছে। অথচ আমাদের কিট দিয়ে আড়াই ঘণ্টার মধ্যেই ফল পাওয়া সম্ভব। মিনাল ভোসলে বলেন, এমন কিট বানাতে তিন থেকে চার মাস সময় লেগে যায়। কিন্তু আমরা
রেকর্ড সময়ে মাত্র ছয় সপ্তাহে এটি তৈরি করেছি। এই বিজ্ঞানী করোনা ভাইরাসের পরীক্ষার কিট তৈরির সময় নিয়েও লড়াই করেছেন। কারণ তিনি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তিনি চাইছিলেন সন্তান জন্ম দেওয়ার আগেই কাজটি শেষ করতে।
গত ফেব্রুয়ারি তারা কাজ শুরু করেন। ১৮ মার্চ তিনি কিটটি পর্যালোচনার জন্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে (এনআইভি) জমা দেন। পরের দিন সন্তান প্রসবের জন্য অস্ত্রোপচার করার এক ঘণ্টা আগে তিনি বাণিজ্যিকভাবে
অনুমোদন পেতে খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন এবং ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠান। এরপর সন্ধ্যায় হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তিনি কন্যাসন্তান জন্ম দেন।