স্টাফ রিপোর্টারঃ চুয়াডাঙ্গায় একটি এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী স্কুলের কাজ বাদ দিয়ে সপ্তাহে চার দিন দুটি সাবরেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখার কাজ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কুকিয়াচাঁদপুর গ্রামের এমপিওভুক্ত আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ওই কেরানির নাম মতিয়ার রহমান। অভিযুক্ত কেরানি গাইদঘাট বিশ্বাসপাড়ার মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে। মতিয়ার রহমান স্কুলের দাপ্তরিক কাজ বাদ দিয়ে চুয়াডাঙ্গা ও দামুড়হুদা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে সপ্তাহে চার দিন দলিল লেখার কাজ করায় ওই স্কুলের ছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কুকিয়াচাঁদপুর আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়টি ১৯৯৯ সালে কুকিয়াচাঁদপুর বাজারের পাশে স্থাপিত হয়। স্কুলটিতে ২০১৪ সালে মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহযোগিতায় চার কক্ষবিশিষ্ট একটি পাকা বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়। ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর সারা দেশব্যাপী ২৭৩০টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেন বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় চুয়াডাঙ্গার ২২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি হয়। যার মধ্যে কুকিয়াচাঁদপুর আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যায়লটিও এমপিওভুক্ত হয়। বর্তমানে শিক্ষক-কর্মচারী মিলে স্কুলটিতে ১৭জন কর্মরত আছেন। এ স্কুলে অফিস সহকারী (কেরানি) হিসেবে কর্মরত আছেন মতিয়ার রহমান।
স্কুলে উপস্থিতির হাজিরা খাতায় নিয়মিত তার স্বাক্ষর থাকলেও স্কুলের দাপ্তরিক কাজে তাকে পাওয়া যায় না। স্কুল খোলার পরপরই হাজিরা খাতাই নিজের স্বাক্ষর করেই তিনি চলে যান সাবরেজিস্ট্রি অফিসে। সপ্তাহে চার দিন এভাবে স্কুল ফাঁকি দিয়ে দলিল লেখার কাজ করেন মতিয়ার। অল্প সময়ের মধ্যেই ভালো দলিল লেখক হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছেন তিনি। সপ্তাহে রবি ও সোমবার চুয়াডাঙ্গা সদরের এবং মঙ্গল ও বুধবার দুমুড়হুদা উপজেলা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখেন তিনি। তার দলিল লেখক লাইসেন্স নম্বর- ১৭৩। অফিস সহকারী মতিয়ার রহমানের অফিস ফাঁকির বিষয়ে কুকিয়াচাঁদপুর আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হানিফ উদ্দীনকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি প্রথমে কিছুই জানেন না বলে এড়িয়ে যেতে চাইলেও পরে তিনি স্বীকার করেন এবং বলেন, স্কুলের কেরানি মতিয়ারকে এ বিষয়ে একাধিকবার সাবধান করা হলেও তিনি কৌশলে দলিল লেখার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।’ অভিযুক্ত মতিয়ার রহমানেরর কাছে অফিস ফাঁকি দিয়ে দলিল লেখার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন,বছর কয়েক ধরে সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে দলিল লেখক হিসেবে কাজ করে আসছেন তিনি। বাড়তি কিছু টাকা রোজগার করার আশায় তিনি স্কুলের দাপ্তরিক কাজের পরই এ কাজ করেন। তবে অফিস ফাঁকির বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার করেন তিনি। এ সময় তিনি আরও জানান,
দলিল লেখার কাজ তিনি ছাড়বেন না।’ চুয়াডাঙ্গা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিখিল রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, স্কুলের শিক্ষক বা কর্মচারী, তিনি যেই হোন, স্কুল ফাঁকি দিয়ে অন্য কোথাও কাজ করার সুযোগ নেই। স্কুলের দাপ্তরিক কাজ বাদ দিয়ে দলিল লেখার বিষয়ে এর আগেও কেরানি মতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্তপূবর্ক তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।