সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ ‘আমি নিজেই শোবারঘরে স্ত্রী রত্নাকে পেট্রল দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছি’ বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মোবারকপুরের গৃহবধ ফারহানা আক্তার রত্নার স্বামী হাসিবুর রহমান সবুজ। সোমবার সকালে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান
তার সম্মেলনকক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন। তিনি বলেন হাসিবুর রহমান সবুজ সাতক্ষীরার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাকিবুল ইসলামের আদালতে রত্নাকে তার শয়নকক্ষে পেট্রল ছিটিয়ে আগুন লাগিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। গ্রেফতারের পর তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সুপার জানান, গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে আগুন দিয়ে হত্যার লক্ষ্যে হাসিবুর রহমান সবুজ তিন লিটার পেট্রল কিনে আনেন। পরে তিনি ভাড়া বাসায় নিজেদের শয়নকক্ষে পাইপের মাধ্যমে পেট্রল ছিটিয়ে দেন। এর পরই গ্যাস লাইটার জ্বালিয়ে আগুন
ধরিয়ে দেন। এতেই গৃহবধূ রত্না পুড়ে যান। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেলের
বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হলে গত ৪ মার্চ মারা যান রত্না (২৬)।

হত্যার মোটিভ জানাতে গিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ফারহানা আক্তার রত্নার আগের স্বামী মিজানুর রহমানের সঙ্গে তার ৩-৪টি মামলা চলমান রয়েছে। তা ছাড়া মিজানুর রত্নার মাধ্যমে তার বাবার কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তা আর শোধ করছিলেন না। এ নিয়ে বিরোধ চরমে উঠলে ২০১৯ সালে রত্না খুলনার ডুমুরিয়ার মিজানুরের ঘর ছেড়ে কুষ্টিয়ার হাসিবুর রহমান সবুজকে বিয়ে করে তালার মোবারকপুরে বাবু সাধুর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। রত্না এর পর থেকে সবুজকে ব্যবহার করে সাবেক স্বামী মিজানুরের দোকান পুড়িয়ে ও তাকে হত্যার পাঁয়তারা করতে থাকেন। অন্যদিকে সবুজের ধারণা জন্মায় যে রত্না তার সাবেক
স্বামীর সঙ্গে এখনও মেলামেশা করেন। এসব নিয়ে রত্না ও সবুজের মধ্যে সন্দেহ ও মতবিরোধ চাঙ্গা হতে থাকে। এসবের প্রতিশোধ নিতে সবুজ পেট্রল দিয়ে তার স্ত্রীকে হত্যা করেন। তার ধারণা ছিল, ঘরের মধ্যে পাইপ দিয়ে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগালে সবাই বুঝবে রত্না আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর সবুজ ১৬১ ধারা ও পরে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বলে জানান পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান।