চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধিঃ বার্ধক্যজনিত কারণে শারীরিক সামর্থ্য না থাকায় কোনো কাজ করতে পারেন না বলে সংসারে অভাব-অনটন নিত্য সঙ্গী। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন অনেক আগেই। এক ছেলে সে-ও বিয়ের পরে পৃথক হয়ে
গেছে। প্রতিবন্ধী স্ত্রীকে নিয়েই অভাবের সংসারে খেয়ে না-খেয়ে দিনপাত করছেন তারা। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি বহু সাহায্য-সহযোগিতা এলাকার অনেক সামর্থ্যবানরা পেলেও সামান্য পরিমাণ খাদ্য সহায়তা পায়নি এই বৃদ্ধ দম্পতি। অসহায় লোকমান সর্দার ও আকলিমা খাতুন দম্পতির বসবাস চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের জগতলা দক্ষিনপাড়া গ্রামে। সরেজমিন শনিবার বিকেলে বৃদ্ধ দম্পতির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ শারীরিকভাবে অসুস্থ লোকমান সর্দার কোনো কাজ-কর্ম না করতে পারায় কোনো ওষুধও কিনে খেতে পারেননি। শারীরিক ভাবে ভীষণ দুর্বল মানুষটি বাড়ির পাশেই গাছের নিচে
শুয়ে বসে দিনপাত করছেন। স্ত্রীরও এক পা পঙ্গু হয়ে যাওয়ায় সে-ও বাহিরের কোনো কাজ-কর্ম করতে পারেনা। একমাত্র ছেলে সে-ও বাড়ির পাশে আলাদা বাড়ি করে স্ত্রী নিয়ে থাকেন। ক্ষুধা আর অভাবের কথা পাড়া-প্রতিবেশীরা শুনে যেটুকু সম্ভব সাহায্য-সহযোগিতা করেছে সেটা দিয়েই চলছে দিনপাত। মৃদুভাবে স্থানীয় ইউপি সদস্যকে বলেও কোনো সাহায্য-সহযোগিতা পাননি তিনি। বৃদ্ধ লোকমান সর্দার কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা গরিব মানুষ আমাদের খবর কে নেবে। রোজা আমাদের সারা বছরই মনে হয়। কেননা রোজার দিনেও যেমন সারা দিন উপোস থাকতে হয়, অন্য সব দিনেও তাই হয়। আনোয়ার মেম্বারকে অনেকবার বলেছি কিছু খাবার দেওয়ার জন্য। কিন্তু সে দেয় অবস্থা ভালো তাদের
আর তার আত্মীয়-স্বজনদের। এভাবেই হয়তো রোগে-শোকে মারা যাব, তবুও আর কারো কাছে হাত পাতব না। বিষয়টি চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার মোহাম্মদ রায়হানকে অবহিত করা হলে তিনি জানান, আসলে বিষয়টি আমার জানা নেই। কথাটি শুনে আমার ভীষণ খারাপ লাগছে। আমি এখনই সংশ্লিষ্ট ওই ওয়ার্ডের মেম্বারকে জানাচ্ছি এবং গ্রাম পুলিশ দিয়ে এখনই ওই পরিবারে খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি।