সূত্রে জানা গেছে, শিল্প অঞ্চল সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত ৩০টি পোশাক কারখানার প্রায় কয়েক হাজার শ্রমিক এখনো বেতন-ভাতা পায়নি। এর মধ্যে কিছু পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বেতনের দাবিতে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছে। শনিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে বাংলানিউজকে একটি খুদে বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সূত্রটি। বেতন না দেওয়া কারখানাগুলো হলো- সাভারের রাজাশন এলাকার ‘আলসিনা গার্মেন্টস লিমিটেড, জিনজিরার ‘একে এক্সসরিজ লিমিটেড, বিরুলিয়ার ‘মারাহাবা স্পিলিং মিলস,
‘শাপলা হাউসিং, ‘জেরী ফ্যাশন লিমিটেড, ‘ভার্সেটাইল এটার্স লিমিটেড, ‘মাইল্ড ওয়ান নিট কম্পোজিট লিমিটেড, ‘ইয়াং স্মার্ট ফ্যাশনস লিমিটেড, ‘নাভানা ফার্নিচার লিমিটেড, ‘এবিসি বাংলা অ্যপালেস লিমিটেড, হেমায়েতপুরের ‘ডার্ড গ্রুপ, ‘মাস ডিজাইন, ‘জেইশা ফ্যাশন লিমিটেড, ‘অকিড গার্মেন্টস, আশুলিয়ার ‘ক্যাথে এপারেলস লিমিটেড, ‘মায়ামিঠু ফ্যাশন, ‘পান্না টেক্সটাইল লিমিটেড, ‘নিউ এশিয়া ফ্যাশন লিমিটেড, ‘চান্তিক গার্মেন্টস লিমিটেড, ‘হাদিয়াত ফ্যাশন লিমিটেড, ‘শাপয়ান আউটওয়ার লিমিটেড, ‘প্রিয়ংকা ফ্যাশন লিমিটেড, ‘পলমল গ্রুপ, ‘শাফা সোয়েটার, ‘আইকিউ শাট লিমিটেড, ‘এ ওয়ান বিডি লিমিটেড ও ধামরাইয়ের ‘ইমাকোয়ালিটি লিমিটেড, ‘মুমু ফ্যাশন লিমিটেড, ‘এস এন্ড ডি এমবুটারি লিমিটেড। এই সব কারখানায় প্রায় ৩০ হাজারেরও বেশি শ্রমিক রয়েছে। তাদের মধ্যে কোনো কারখানার শ্রমিকরা ৩ মাসের মত বেতন পাবেন আবার কোনো কারখানার শ্রমিকরা শুধু মার্চ মাসের বেতন পাবেন। শ্রমিকরা জানান, এই বেতনের ওপর নির্ভর করে ঘরভাড়া, দোকান বাকি, বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, সন্তানদের লেখাপড়া, সংসার খরচ সবই চালাতে হয়। বেতন না হওয়ায়
চরম বিপাকে পড়েছে তারা। করোনা ভাইরাসের কারণে বাইরেও বের হওয়া যায় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের বেকেয়া বেতন-ভাতা দেই দিচ্ছি বলে ঘোরাচ্ছে। এর মধ্যে আবার করোনা ভাইরাসের কারণে কারখানা বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। ফলে তারা আর্থিক সঙ্কটে পড়েন। নরসিংহপুর এলাকার ক্যাথে অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার ফিনিশিং শাখার শ্রমিক রানা মিয়া বলেন, জানুয়ারি থেকে কারখানার দুই শতাধিক শ্রমিকের বেতন-ভাতা বকেয়া রয়েছে। মালিকপক্ষ দেই দিচ্ছি বলেও ঘোরাচ্ছে।
শ্রমিকদের ঘরে খাবার নেই, কোথাও থেকে ত্রাণও পাচ্ছে না। কি খাবো আর কোথায় যাবো আমরা এ ব্যাপারে ক্যাথে অ্যাপারেলস লিমিটেড এর মালিক
মোয়াজ্জেমের সঙ্গে মোবিইল ফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এছাড়া বাকি কারখানাগুলোর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কেউ আজ বেতন পরিশোধ করবে আবার কেউ ২০ এপ্রিলের মধ্যে
শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করবে বলে।জানিয়েছেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাংগঠনিক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, আসলে এখন যে বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে পোশাক কারখানার মালিকরা সরকারকে তোয়াক্কা করছে না। সরকারের কোনো নির্দেশনা গার্মেন্টস মালিকরা
মানছেন না। গত চল্লিশ বছর ধরে গার্মেন্টস মালিকরা বাংলাদেশে ব্যবসা করে আসছেন, এই সংকটের সময় যদি তারা দেশের পাশে না দাঁড়ায় তাহলে তারা দেশের অর্থনীতি টিকিয়ে রাখতে কতটা ভরসা রাখে। সরকারের কাছে আমার অনুরোধ না খেয়ে থাকা শ্রমিকদের যেন দ্রুত বেতন পরিশোধ করা হয়।