বৃহস্পতিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২১, ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন

কোম্পানীগঞ্জে প্রতিবাদ সভায় গুলি ককটেল হামলা

স্টাফ রিপোর্টার / ৭০ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২১, ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াতের ওপর হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। সভা চলাকালে প্রতিপক্ষের হামলায় তা পণ্ড হয়ে গেছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারীরা হামলা করে প্রতিবাদ সভাটি পণ্ড করে দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।
 
এ সময় মুহুর্মুহু গোলাগুলি এবং শত শত ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় পুরো বসুরহাট এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। আতঙ্কে সভাস্থল থেকে নারী-পুরুষ দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করে। গোলাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ এবং সংঘর্ষের সময় কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি ও চার পুলিশ সদস্যসহ অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন।

র‌্যাব-পুলিশ দ্রুত ঘটনা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও গোলাগুলি ও বোমা বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। সংঘর্ষে লিপ্ত উভয়পক্ষ লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বসুরহাট বাজারের দুটি স্থান বসুরহাট পৌরসভা কার্যালয় ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থান করছে। 

ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত ওসি মীর জাহেদুল হক রনি জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১২-১৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে এবং ঘটনাস্থলে র‌্যাব ও পুলিশ এখন অবস্থান করছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বসুরহাট রূপালী চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত দলীয় সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াতের ওপর হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ সভা চলছিল। সভা চলাকালে বসুরহাট পৌরসভা কার্যালয় থেকে কাদের মির্জার সমর্থিতরা সভাস্থলে এসে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হামলা করে। এ সময় উভয় পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র রূপ নেয় বসুরহাট বাজার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি, এসআই জাকির, এসআই নিজাম, কনস্টেবল আলাউদ্দিনসহ উভয়পক্ষের প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল জানান, কাদের মির্জা বাহিনীর সন্ত্রাসীদের গুলিতে রাজু (২২) নামে এক যুবকসহ চারজন গুলিবিদ্ধ ও ৩০-৩৫ জন আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ রাজু চরএলাহী ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাকের ছেলে। 

এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ তার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা করেছে। পুলিশের হামলায় তার ২০-৩০ জন কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন।

এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রতিবাদ সভার পূর্বে মেয়র আবদুল কাদের মির্জার নানা অনিয়ম, অপরাজনীতি, মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াতের ওপর হামলার প্রতিবাদে বসুরহাট বাজারে শত শত নারী-পুরুষ তাকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবিতে ঝাড়ুমিছিল করে। 

উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশারের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আরজুমান পারভীন, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান আজম পাশা চৌধুরী রুমেল, সেতুমন্ত্রীর ওবায়দুল কাদেরের ভাগ্নে সাবেক ছাত্রনেতা মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু, স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদ সদস্য ফখরুল ইসলাম রাহাত, উপজেলা আওয়ামী সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াতের ছেলে ডা. সাফিকুল হায়াত, সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি জায়েদল হক কচি, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ ফরহাদ লিংকন প্রমুখ।

সভায় বক্তারা দলীয় সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াতের ওপর হামলার ঘটনায় মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং এ হামলার ঘটনায় তাকে ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের বক্তব্য চলাকালীন সভাস্থলে হামলার ঘটনায় সভাটি পণ্ড হয়ে যায়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর