হাফিজুর রহমানঃ “কন্যা সন্তান বোঝা নয়, আশীর্বাদ”- পুলিশ সুপার, চুয়াডাঙ্গা “মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার” এই স্লোগানকে সামনে রেখে মুজিববর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের অবিভাবক মান্যবর পুলিশ সুপার জনাব মোঃ জাহিদুল ইসলাম পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে বিভিন্ন প্রকার সামাজিক, মানবিক ও উৎসাহমূলক গণমুখী কার্যক্রমে ভূমিকা রেখে চলেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় নারীর ক্ষমতায়ন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ এবং লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণে পুলিশ সুপার চুয়াডাঙ্গা এক ব্যতিক্রমধর্মী পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের ফেসবুক পেজে “কন্যা সন্তান জন্ম হলে ফোন করুন, উপহার পৌঁছে যাবে সাথে সাথে” শিরোনামে একটি পোষ্ট দেওয়া হয়। এটি নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে জেলা পুলিশের একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ।
গত ০৪.০৩.২০২১ তারিখ সকাল ১০.২০ ঘটিকার সময় চুয়াডাঙ্গা থানাধীন বুজরুকগড়গড়ী গ্রামের মোঃ বাবু হোসেন জানান তার স্ত্রী গত ০৩.০৩.২০২১ খ্রি. তারিখে একটি ফুটফুটে কন্যা শিশু জন্ম দিয়েছে। পুলিশ কন্ট্রোলরুম তাদের বাচ্চা ভুমিষ্ট হওয়ার সু-সংবাদ জানানোর সাথে সাথে পুলিশ সুপার, চুয়াডাঙ্গার নির্দেশে কয়েকজন পুলিশ সদস্য ঐ শিশুর জন্য (ক) ফুলের তোড়া (খ) নিউবর্ণ বেবী প্যাকেজ নিয়ে উপস্থিত হয়। পুলিশ সদস্যদের উপহার পেয়ে নতুন শিশুর পরিবারের সদস্যদের আনন্দে উৎফুল্ল হয়। কন্যা শিশুর পরিবারের লোকজন পুলিশ সুপারের পাঠানো উপহার পেয়ে খুব খুশি হয়, পুলিশ সুপারের আন্তরিকতা ও ভালবাসায় মুগ্ধ হয়ে সু-স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন। (২) মোঃ রফিকুল ইসলাম, সাং-মর্তুজাপুর, থানা ও জেলা-চুয়াডাঙ্গা ফোনে জানান গত ২১.০২.২০২১ খ্রি. তারিখে তার স্ত্রী একটি কন্যা শিশুর জন্ম দিয়েছে। (৩) মোঃ বিদ্যুৎ খাঁন, সাং-জয়রামপুর, থানা-দামুড়হুদা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা ফোনে জানান গত ২৪.০২.২০২১ খ্রি. তারিখে তার স্ত্রী একটি কন্যা শিশুর জন্ম দিয়েছে। (৪) মোঃ আঃ মমিন , সাং-নিমতলাা, থানা-আলমডাঙ্গা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা ফোনে জানান গত ১৮.০২.২০২১ খ্রি. তারিখে একটি কন্যা শিশুর জন্ম দিয়েছে, (৫) মোঃ শামীম হোসেন, সাং-৬২ আড়িয়াা, থানা-দর্শনা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা ফোনে জানান গত ০২.০৩.২০২১ খ্রি. তারিখে তার স্ত্রী একটি কন্যা শিশুর জন্ম দিয়েছে (৬) মোঃ শাহাজান আলী, সাং-প্রতাবপুর, থানা-দর্শনা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা ফোনে জানান গত ২৫.০২.২০২১ খ্রি. তারিখে তার স্ত্রী একটি কন্যা শিশুর জন্ম দিয়েছে । সংবাদ জানানোর সাথে সাথে পুলিশ সুপার চুয়াডাঙ্গার নির্দেশে কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ উল্লিখিত পরিবারের কাছে উপহার সামগ্রী নিয়ে তাদের বাসায় উপস্থিত হন। এ পর্যন্ত ৫৩২ টি কন্যা শিশুর পরিবারকে পুলিশ সুপার, চুয়াডাঙ্গার পক্ষ থেকে উপহার প্রদান করা হয়েছে। পুলিশ সুপারের এই ব্যতিক্রমী কর্মকান্ডের প্রশংসা এখন স্থানীয় জনসাধারণের মুখে মুখে। কন্যা সন্তান জন্ম নেওয়ার কারনে সংসারে কলহ সৃষ্টি ও পারিবারিক অসন্তোষ দেখা যায়। পুলিশ সুপারের এই মহতী উদ্যোগ হতে পারে সমাজের ঐ সকল পরিবারের জন্য ইতিবাচক বার্তা।
পুলিশ সুপার চুয়াডাঙ্গা বলেন, দেশের মোট জনগোষ্ঠির অর্ধেক নারী। এই বিপুল সংখ্যাক নারী পিছিয়ে থাকলে সামগ্রিক উন্নয়ন অসম্ভব। তিনি চুয়াডাঙ্গার সর্বস্তরের জনসাধারণের কাছে আইন শৃংঙ্খলা রক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, নারী ও শিশু নির্যতান প্রতিরোধ এবং লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরনে সহযোগিতা কামনা করেন।