শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ১২:১১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
সংবাদ শিরোনাম :
দর্শনা থানা পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানে ৩ কেজি গাঁজাসহ ২ মাদক ব্যবসায়ী আটক জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি), মাদক বিরোধী অভিযানে ছয়শত পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার সহ আটক- ১ মানবতার কল্যাণ ফাউন্ডেশন রংপুর বিভাগের মিলনমেলা-২০২১ এক সময় তারকা সংকট দেখা দিলে এদেশে কাজ করতে এসেছেন মুনমুন সেন, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তসহ আরও অনেক নায়িকারা চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় পাখি ভ্যান উল্টে নিহত ১ আহত ২ মণিরামপুর থানা পুলিশের অভিযানে ১২ জন ওয়ারেন্ট ভূক্ত আসামি ও ১৫ পিচ মাদকদ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেট সহ একজন আটক চলচ্চিত্রশিল্প কোনো সংকটই কাটিয়ে উঠতে পারছে না মোরেলগঞ্জে ঘেরের ভেড়িতে করলা চাষে লাভবান কৃষকের মুখে মিষ্টি হাসি আমি যে তোর — আলমডাঙ্গায় আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন।যে কোন সময়ের চেয়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল

ডিম বিক্রি করে সংসার চালান ‘মাঠ কাঁপানো ফুটবলার

স্টাফ রিপোর্টার / ৭২ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম : শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ১২:১১ পূর্বাহ্ন

হাতেম আলীর বয়স ৮৫ বছরের কাছাকাছি। ছিলেন ষাট-সত্তর দশকের পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড়। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে ভারতের বিপক্ষে পূর্ব পাকিস্তানের হয়ে খেলেছেন। স্বাধীনতার পরে ঢাকা মোহামেডান, ঢাকা ওয়ান্ডারার্স, ভিক্টোরিয়াসহ বিভিন্ন ক্লাবের নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন তিনি। কিন্তু অদৃষ্টের কী পরিহাস! শেষ বয়সে বেঁচে থাকার লড়াই করছেন রাজশাহীর বরেন্দ্র জাদুঘর মোড়ে সিদ্ধ ডিম বিক্রি করে। বিগত ১০ বছর ধরে তিনি এখানে ডিম বিক্রি করেন।গত কয়েক দিনে সরেজমিন দেখা গেছে, বরেন্দ্র জাদুঘরের পাশে হাতেম আলী ও তার স্ত্রী মমতাজ বেগম ডিম সেদ্ধ করে বিক্রি করছেন। ওই এলাকায় ‘দাদু’ নামে পরিচিত তিনি।

এই ডিমওয়ালা দাদু জানান, দেশজুড়ে তসলিমা নাসরিনবিরোধী আন্দোলনের সময়ে ১৫ মাস জেলে কাটিয়েছেন। সেই সময়েই খেলাধুলায় উপার্জিত টাকা খুইয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। পরে বেছে নেন গবাদিপশুর মাংস ও চামড়া বিক্রির ব্যবসা। 

ভালোই চলছিল জীবন। ছন্দপতন ঘটে ছেলের মৃত্যুতে। তার এক ছেলেকে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ছেলে হারানোর শোকে ছাড়েন সেই পেশা। শুরু করেন সেদ্ধ ডিম বিক্রির ব্যবসা।

হাতেম আলী জানান, ছোটবেলায় খেলার মাঠের বল কুড়াতেন। সেখান থেকেই শিখেছেন ফুটবল মাঠের নৈপুণ্য। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের আগে ভারতের বিপক্ষে তাদের মাটিতে খেলেছেন একবার। 

তার দাবি, জাতীয় দলের হয়ে গোলপোস্টের অতন্দ্র প্রহরীর দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশ স্বাধীনের পর বিভিন্ন ক্লাবে খেলেছেন। খেলাধুলার ইতি টেনেছেন ১৯৮২ সালে।

বেশিরভাগ সময়েই হাতেম আলীর পাশে থাকেন স্ত্রী মমতাজ বেগম। তিনি জানান, ডিম বিক্রি করে প্রতিদিন ১২০ থেকে ১৫০ টাকা আয় হয়। পান বয়স্ক ভাতার কিছু টাকা। সেই টাকাতেই সংসার চলে। আগে খেলোয়াড় ভাতা পেলেও দুর্ভাগ্যক্রমে সেটা বন্ধ হয়ে গেছে।

নিজেকে একজন মুক্তিযোদ্ধা বলে দাবি করেন হাতেম আলী। তিনি জানান, মুক্তি সংগ্রামের যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে। রাজশাহী সংলগ্ন ভারতের শেখপাড়া-কাহারপাড়া ক্যাম্পের অধীনে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেই সময় অন্যরা মুক্তিযোদ্ধা কার্ড নিলেও তিনি নেননি।

মহানগরীর হোসেনীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা হাতেম আলী। আটবার বসেছেন বিয়ের পিঁড়িতে। বহু বিয়ের কারণ হিসেবে তিনি জানান, চারজন মানসিক রোগী, নির্যাতিতা ও দুস্থ নারীকে বিয়ে করে তাদের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ৮ স্ত্রীর সংসারে রয়েছে ১২ ছেলে ও ৯ মেয়ে।

সন্তানদের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা আলাদা হয়ে গেছে। তাদের উপার্জন আমি খেতে চাই না। আমি সৎপথে, হালাল উপার্জন করে খেতে চাই। এখন আমার পাঁচজনের সংসার। কারও সাহায্য ছাড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।

সেই সময় মুক্তিযোদ্ধার কার্ড না নিলেও এখন আক্ষেপ প্রকাশ করেন হাতেম আলী। মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি ও খেলোয়াড় ভাতা পুনরায় চালুর জন্য মুক্তিযোদ্ধাপ্রেমী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

হাতেম আলীর ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদুন নবী বলেন, তিনি ভালো গোলরক্ষক ছিলেন বলে জানি। জেলা ফুটবল দলের হয়ে খেলেছেন ৬-৭ বছর। জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন কিনা-এমন তথ্য আমাদের কাছে নেই। উনার সমসাময়িক খেলোয়াড়দের কেউই সেটা বলতে পারেননি। বঙ্গবন্ধু ক্রীড়া ফাউন্ডেশন থেকে তার জন্য ভাতার ব্যবস্থা করতে আবেদন করিয়েছি। আশা করি তিনি তা পাবেন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর