নিজস্ব প্রতিবেদকঃ শীত মৌসুমে প্রায় চার হাজার পরিবারের অন্যতম আয়ের উৎস আড়াই লাখ খেজুর গাছ। শীতের আগমনী সময়ে শুরু হয় এসব খেজুর গাছের পরিচর্যা। গাছিরা পুরো মৌসুম ব্যস্ত থাকে গাছ পরিচর্যা, রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরিতে। এখান থেকেই বড় উৎস তৈরি হয় তাদের। চুয়াডাঙ্গায় এবার মোট ২ লাখ ৫০ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে। এসব গাছ থেকে চলতি বছর ২ হাজার ৫শ’ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদন হবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। জানা গেছে, খেঁজুরের রস, গুড় ও পাটালি তৈরিতে প্রসিদ্ধ জেলা চুয়াডাঙ্গা। অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় এ জেলার রস মিঠা ও সুস্বাদু হওয়ায় রস-গুড়ের কদর একটু বেশি। তাই এখানকার রস- গুড়ের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। দেশে তো বটেই দেশের বাইরেও এর বেশ কদর রয়েছে। শীত আসছে, তাই কে কতো আগে খেজুর রস সংগ্রহ করতে পারে সে প্রতিযোগিতা চলছে চুয়াডাঙ্গার গাছিদের মধ্যে। রীতিমতো ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন গাছিরা। জেলার সবখানেই শুরু হয়েছে খেজুর রস সংগ্রহের কর্মযজ্ঞ। ক্ষেতের ধার, রাস্তার পাশে, পুকুর পাড়ে-অযত্নে-অবহেলায় বেড়ে ওঠা খেজুরের গাছ জেলার অর্থনীতি প্রবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে। শীত মৌসুমে রস-গুড় উৎপাদন করে প্রায় ৫/৬ মাস ভালোভাবে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে জেলার কয়েক হাজার পরিবার। করোনার সংকটে সংসার চালাতে সম্বল হবে খেজুরের রস-গুড়।
শীতের আগমনী সময় চলছে। তাই গাছিরাও খেজুর গাছের ডাল-পালা পরিস্কার করে যাবতীয় কাজ পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছেন। দিন দশেক পরই মিলবে রস, গুড় ও পাটালি। রাজধানী
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হয় এ জেলার গুড়-পাটালি। সদর উপজেলার দ্বীননাথপুর গ্রামের গাছি আব্দুল ওহাব জানান, তার ক্ষেতের ধার ঘেঁষে প্রায় ১শ’টি খেজুর গাছ আছে। সারা বছর এসব গাছের পেছনে কোনো খরচ নেই তার। অথচ শীত মৌসুমে গাছের রস থেকে গুড়, পাটালি বিক্রি করে ৫/৬ মাস সংসার চলে যায়। খেজুর গাছ আরেক গাছি গাফফার মিয়া জানান, রস সংগ্রহে গাছে ছোট পাতিল (মাটির তৈরি পাত্র) বাঁধার আগে প্রতিদিন সেগুলো ধুঁয়ে নিয়ে আগুন দিয়ে পোড়া দিই। এরপর গাছে বাঁধি। সেই সঙ্গে খেজুরের পাতা দিয়ে ভাঁড় ঢেকে দিই। এভাবে প্রতিদিন রস সংগ্রহ করি। এছাড়াও সকালে গুড়-পাটালি করার সময় কোনো
কেমিকেল মেশানো হয়না।