ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলায় স্ত্রী স্বীকৃতি না দেয়ায় আন্নেছ আলী (১৯) নামে এক যুবকের আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সকালে উপজেলার মুজাটী গ্রাম থেকে লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত আন্নেছ আলী মুজাটী দক্ষিণপাড়ার আব্দুল লতিফের ছেলে। স্থানীয়রা জানান, ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন আন্নেছ আলী। ছোটবেলা থেকে একই এলাকার মালেক মিস্ত্রির মেয়ে আল্পনার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। চার বছর আগে ঘটনার জানাজানি হলে কৌশলে মেয়ের বাবা মেয়েকে তার নানার বাড়ি ময়মনসিংহের কেওয়াটখালিতে রেখে আসেন। চার বছর ধরে আল্পনা সেখানেই লেখাপড়া করছিলেন। তবে এতে তাদের প্রেমের সম্পর্কে কখনও ভাটা পড়েনি। মেয়ের পরিবার থেকে অন্যপাত্রের সঙ্গে বিয়ের চাপ দিলে গত ৫ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ জজ কোর্ট থেকে দুজনে এফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করেন। বিয়ের বিষয়টি মেয়ের পরিবার জানতে পেরে মেয়েকে নিয়ে আসে বাবার বাড়ি মুক্তাগাছার মুজাটী গ্রামে। বিয়েটি কোনোভাবেই মানতে পারছিল না মেয়ের পরিবার। সমাধান করতে ঢাকা থেকে ছেলেকে ফোন করে ডেকে আনেন মেয়ে ও তার পরিবারের লোকজন। শুক্রবার রাত ১২টার দিকে ছেলেসহ কয়েকজনকে নিয়ে মেয়ের বাড়ি যান ছেলের বাবা। ছেলেপক্ষ মেয়েকে স্ত্রী হিসেবে আনতে চায়, অন্যদিকে মেয়ের পরিবার মেয়ের বয়সের অজুহাতে ছেলের হাতে তুলে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তারা মেয়েকে তালাক দিতে বলে, এসব আলোচনা চলে রাত ২টা পর্যন্ত। সমাধান আগামীকাল হবে বলে আলোচনা শেষ করে চলে যান সবাই। শনিবার সকালে বাড়ির পাশে একটি গাছে আন্নেছ আলীর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান স্বজনরা। ঘটনার পর মেয়ের পরিবার থেকে কেউ সান্ত্বনা বা সমবেদনা জানাতে আসেননি বলে অভিযোগ করেন ছেলের বড় বোন। ছেলের বড়বোন খাদিজা আক্তার বলেন, আমার ভাইয়ের কোনো দোষ ছিল না। ওই মেয়ে ও তার পরিবার আমার ভাইকে ফোন করে ঢাকা থেকে এনেছিল। পরে মেয়েকে তারা কী বুঝিয়েছে, যার কারণে মেয়ে আর আমার ভাইকে চায় না। এ দুঃখেই আমার ভাই আত্মহত্যা করেছে। মেয়ের বাবা মালেক মিস্ত্রি বলেন, আমার মেয়ে ছোট, বাচ্চা মানুষ। তাকে চাপ দিয়ে কোর্টে নিয়ে বিয়ে করেছে। আমার মেয়ে তার ভুল বুঝতে পেরেছে এবং আমাকে বলেছে আমি যেন ওই ছেলের হাতে তাকে তুলে না দেই। এরই মাঝে শুনলাম ছেলেটা আত্মহত্যা করেছে। মুক্তাগাছা থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, মুজাটী দক্ষিণপাড়া থেকে আন্নেছ আলী নামে একজনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।