সাংবাদিক মেহেদী হাসান মিলন, কলামিস্ট
লাইফ স্টাইল,
জাগো দেশ ডেস্কঃ অনেকের জীবনে অনেক বিড়ম্বনা আছে। আমরা সবচাইতে বেশী যে শব্দের সাথে পরিচিত আর তা হলো খ্যাতির বিড়ম্বনা।তবে আজকে আমার লেখার বিষয়বস্তু নামের বিড়ম্বনা! জানিনা পাঠকবৃন্দ আপনারা কোন সময় নামের বিড়ম্বনায় পড়েছেন কিনা। তবে আমি পড়েছি।আমার পুরো নাম মেহেদী হাসান মিলন। ডাকনাম মিলন। আমার সার্টিফিকেটে নাম দেওয়া আছে মেহেদী হাসান।তো আমি মাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়ে কলেজে ভর্তি হয়েছি।তারপর ইন্টার মিডিয়েটের পরীক্ষা দেবার আগে আমি কলেজে এইচ এস সি পরীক্ষা দেবার জন্য ফর্ম পূরন করে নিশ্চিন্তে বসে আছি।হঠাৎ করে কলেজের এক স্টাফ ফোন দিলেন মেহেদী তাড়াতাড়ি কলেজে আয়। খুব জরুরী দরকার। তো আমি তড়িঘড়ি করে কলেজে আসলাম। আমাকে তখন তিনি বললেন তুমি কার ফর্ম পূরন করেছো? আমি বললাম কেন আমার। তখন তিনি বললেন না, এটা তোমার না। এটা কুড়ুলগাছির মেহেদী হাসানের, যার মায়ের নাম, বাবার নাম তোমার সাথে হুবুহু মিল রয়েছে এমনকি সাবজেক্ট ও। তারপর আমি পুনরায় আমার ফর্মফিলাপ করে চলে আসলাম।সেই মেহেদীর এখন কুড়ুলগাছি ইউনিয়ন পরিষদের সামনে টেলিকমের দোকান রয়েছে।যা হোক সবচাইতে চমকপ্রদ বিষয় হলো কুড়ুলগাছির মেহেদী আর আমাকে দেখলে অনেকে গুলিয়ে ফেলেন। আমাকে ঐ মেহেদী মনে করে অনেকে বলেন ভাই আপনাকে কুড়ুলগাছি দেখেছি, আপনার দোকান আছে এই সেই আরো কত কিছু।তো এদিন হঠাৎ করে মেহেদীর সাথে দেখা। তো বলছে ভাই আমাকে তো অনেকে আপনি মনে করে।সেদিন কার্পাসডাঙ্গা বাজারে একজন বলছে মেহেদী ভাই দাঁড়ান। তো দাড়ালাম তিনি বললেন ভাই আপনার প্রতিটি নিউজ আমি পড়ি।তো আমি ও কোন কিছু না বলে কেনরকমে সাঁই দিয়ে চলে আসলাম। বলেই হেসে ফেললো মেহেদী।তো এই গেলো এক মেহেদীর কথা। আমার ওস্তাদ কার্পাসডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ জলিল মামা তার একটা ভাইয়ের ছেলে আছে কম্পিউটারের দোকান আছে। খুবই ভদ্র ছেলে। সেও এসেছে সাংবাদিকতায়। তার ফেসবুকের আইডির নাম সাংবাদিক মেহেদী হাসান।অনেকে প্রথমত তার আইডিটা আমার নতুন আইডি মনে করেছে। তাছাড়া সে কোথাও সংবাদ সংগ্রহে গেলে পরবর্তীতে অনেকে আমাকে ফোন করে বলেছেন ভাই আমাদের এলাকায় এসেছিলেন শুনলাম ।তো দেখা করলেন না?সাংবাদিক মেহেদী হাসানের বাড়ি আরামডাঙ্গায় আর আমার বাঘাডাঙ্গায়। অনেক সময় সে কাউকে সাংবাদিক মেহেদী বলে পরিচয় দিয়ে কথা বলে, বাড়ি আরামডাঙ্গায় বললেও অনেকে আমি মেহেদী মনে করে আরামডাঙ্গাটা বাঘাডাঙ্গা মনে করে বসেন।যাই হোক আজ হঠাৎ করে কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ আরাফাত ফোন দিয়ে বলছে মিলন ভাই। তো আমি বললাম হ্যাঁ।বলছে ভাই তুমি কি মেম্বারের ত্রানের নামের লিষ্ট কেটে তোমার ইচ্ছামত নাম দিয়েছো। আমি তো অবাক। একটু ভেবে বুঝলাম আরামাডাঙ্গার গ্রাম পুলিশের নাম ও মিলন। তখন আমি আরাফাতকে আমার পরিচয় দিয়ে পুরো নাম বললাম সে তখন তাড়াতাড়ি ফোন কেটে দিলো।আমি একদিন আমার ফুফুর বাসায় গেলাম।
তো ফুফুদের বাসায় খুবই তোড়জোর। বিভিন্ন আইটেমের রান্না। আর ফুফু বারবার বলছেন আজ সাহেব আলী আসবে সাহেব আলী আসবে।আমিও ভাবলাম তিনি কোন সাহেব টায়েব হবেন। নিশ্চয় বড় কোন কর্মকর্তা।পরে তিনি এলেন তখন বুঝতে পারলাম তার নাম সাহেব আলী।আমার পরিচিত একটা ছেলে ছিলো তার নাম জজ। তো তার বাবা কোথাও গেলে বলতো আমার ছেলে জজ। খুব ভালো ছেলে আমাদের খেয়াল রাখে।তো অনেকেই মনে করতো উনার ছেলে হয়তো সরকারী জজ। কিন্তু তিনি যে জজ না তার নামটা যে জজ এটা জানতেই অনেক দেরী হয়েছে অনেকের।কার্পাসডাঙ্গা বাজারে একটি মুদিখানার দোকান আছে উকিলের দোকান নামে পরিচিত। আমি সহ অনেকেই মনে করতাম ভদ্রলোকের পেশা বোধহয় উকালতি তাই তার দোকান উকিলের দোকান নামে পরিচিত। তবে তিনি যে উকালতি করেন না তার নাম উকিল এটা জানতেই প্রায় বছর দশেক লেগেছে।কার্পাসডাঙ্গা কাউন্সিলের মোড়ের সামনে ফাস্টফুডের দোকানদার একিম ভাই বলতো আমার ছেলে পাইলট। সুন্দর গজল গাইতে পারে। আমিও ভাবতাম সে হয়তো বিমানের পাইলট। পরে জানতে পারি বিমানের পাইলট নই তার নামই পাইলট।কার্পাসডাঙ্গা কলেজের দপ্তরি কাশেম চাচার ছেলের নাম মেজর। অনেকে বলতেন উনি মেজরের বাপ।আমি মনে করতাম যেভাবে মানুষ বলে উনি মেজরের বাপ। উনার ছেলে হয়তো সেনাবাহিনীর মেজর। পরে জানতে পারি তার ছেলের নাম মেজর। আমার এক আত্মীয়ের ছেলের নাম ক্যাপ্টেন।বাড়িতে গল্পো শুনি অমুকের ছেলে ক্যাপ্টেন। খুবই মেধাবী। পরে জানতে পারি উনি কোন জাহাজের ক্যাপ্টেন নই তার নামটাই ক্যাপ্টেন।জীবনের এ ধরনের অনেক নামের বিড়ম্বনায় পড়েছি। ভেবেছি এক হয়েছে আরেক।আপনাদেরও যদি কোন এ ধরনের নামের বিড়ম্বনা থেকে থাকে তবে আমার লেখায় কমেন্টস করে জানাবেন।
লেখক: সাংবাদিক মেহেদী হাসান মিলন, কলামিস্ট, কার্পাসডাঙ্গা অফিস