জাগো দেশ ডেস্কঃ যারা সালাতকে (নামায) ইসলামের স্তম্ভ হিসেবে স্বীকার করে কিন্তু তা আদায়ের ক্ষেত্রে উপযুক্ত কারণ ছাড়াই ত্যাগ করে, তারা মুসলিম নয়, বরং কাফির। সহিহ মুসলিম। অবশ্য তারা যদি তওবা করে, নামায কায়েম করে আর যাকাত আদায় করে, তবে তারা তোমাদের দীনী ভাই। (সূরা আত-তাওবাহ : ১১) এই আয়াতে দীনী ভাই হওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালা কিছু শর্তারোপ করেছেন। এগুলো হচ্ছে, যেন তারা শিরক হতে তাওবা করে, সালাত প্রতিষ্ঠা
করে এবং যাকাত প্রদান করে। অতঃপর তাদের পরে এলো অপদার্থ পরবর্তীরা। তারা নামায নষ্ট করল এবং কুপ্রবৃত্তির অনুবর্তী হলো। সুতরাং তারা অচিরেই পথভ্রষ্টতা প্রত্যক্ষ করবে। (সূরা মারইয়াম, আয়াত ৫৯) এই আয়াত সালাত ত্যাগকারীর কুফরি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, নিশ্চয় মানুষ ও কুফরির (শিরক) মাঝে পৃথককারী বিষয় হচ্ছে সালাত ত্যাগ করা।` (সহিহ মুসলিম)। আমাদের ও তাদের (কাফিরদের) মাঝে চুক্তি হচ্ছে
সালাতের, অতএব যে ব্যক্তি সালাত ত্যাগ করল সে কুফরী করল।` (মুসনাদে আহমাদ, আবু দাউদ, তিরমিযি, নাসায়ি, ইবনে মাজাহ) আর এখানে কুফরির অর্থ হলো, এমন কুফরি যা মানুষকে ইসলাম থেকে বের করে দেয়। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সালাতকে মু`মিন ও কাফিরদের মাঝে পার্থক্যকারী বলে ঘোষণা করেছেন। ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহ) বলেন, সালাত ত্যাগকারী কাফির হয়ে যায়, আর এমন কুফরিতে নিমজ্জিত হয়, যা
দীন ইসলামের সীমানা হতে বহিষ্কার করে দেয়। তাকে হত্যা করা হবে যদি সে তাওবাহ করত সালাত না প্রতিষ্ঠা করে। কিছু ইমাম বলেছেন, সালাত ত্যাগকারী মুরতাদের জানাজার নামাজ পড়া যাবে না, তাকে মুসলিমদের কবরস্থানে দাফন
করা যাবে না, তাকে সালাম দেয়া যাবে না এবং তার সালামের উত্তরও দেয়া যাবে না, তাকে সম্পত্তির ভাগ দেয়া যাবে না। কোরআন মাজিদে বলা হয়েছে, `যে ইমানদারগণ! ভীত মনে মনোযোগের সঙ্গে নামাজ আদায় করেছে, তারাই (দোজখ থেকে) মুক্তির অধিকারী হয়েছে।` (সূরা মুমিন, আয়াত ২১) এ সম্পর্কে হাদিস
শরিফে বর্ণিত আছে যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,যে ব্যক্তি নামাজের হিফাজত করে তার জন্য এটা কিয়ামতের দিন জ্যোতি, দলিল ও মুক্তির কারণ হবে।` (মুসনাদে আহমাদ ও বায়হাকি)। ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের দ্বিতীয় স্তম্ভ হচ্ছে নামাজ। নামাজ` ফারসি শব্দ, আরবিতে নামাজকে সালাত` বলা হয়। এর আভিধানিক অর্থ সম্পর্ক ও সান্নিধ্য। ইসলামের পরিভাষায় এই সালাত আল্লাহ ও তাঁর বান্দাদের মধ্যে যোগাযোগ ও সান্নিধ্যের এমন এক বিশেষ সম্পর্ক গড়ে তোলে, যা অন্য কোনো ইবাদতের বিনিময়ে অর্জন করা সম্ভব নয়। কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাত ইসলামের এ পাঁচটি মূল স্তম্ভের মধ্যে নামাজের গুরুত্ব সর্বাধিক। মাহে রমজান অফুরন্ত রহমত, বরকত, মাগফিরাত, নাজাত ও ফজিলতপূর্ণ মাস। তাই পবিত্র রমজান মাসে পাঞ্জেগানা নামাজসহ তারাবিহ, তাহাজ্জুদ, সুন্নত ও নফল নামাজ আদায়ের গুরুত্ব আরো অনেক বেশি। আল্লাহ তায়ালা কোরআন কারিমে ৮২ বার প্রত্যক্ষভাবে নামাজ আদায়ের জন্য নির্দেশ প্রদান করে বলেছেন, আর তোমরা নামাজ কায়েম করো বা নামাজকে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করো।` (সূরা মুযযাম্মিল, আয়াত ২০)।