মঙ্গলবার, ০২ মার্চ ২০২১, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন

গাজীপুরে ২৫৮টি কারখানার বেতন বকেয়া চলছে শ্রমিক অসন্তোষ

Reporter Name / ১৫০ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ০২ মার্চ ২০২১, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন

আশানুর রহমান গাজীপুর প্রতিনিধিঃ ৫৫৮টি কারখানার মধ্যে ১৮০টিসহ মোট ২৫৮টি কারখানায় শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন মঙ্গলবার পর্যন্ত বকেয়া রয়েছে।গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোগড়া এলাকায় কিছু শ্রমিক ও কর্মচারীর মার্চের বেতন না দিয়ে স্টাইলিশ গার্মেন্টস কারখানা প্রায় এক মাস আগে বন্ধ ঘোষণা করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। গত সোমবার ওই কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতন পরিশোধ ও কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করেছে। তারা কারখানার পাশের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেছে, মোটরসাইকেল-বাইসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করেছে। আশপাশের কারখানাগুলোতে ইটপাটকেল ছুড়ে দরজা-জানালার কাচ ভাঙচুর করেছে। মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। পরে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।এসপি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা শ্রমিক, শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক অসন্তোষ থামিয়ে রেখেছি। কিন্তু বকেয়া বেতন-ভাতার দাবি দূরণ না হলে তাদের কত দিন এভাবে বেতনের আশ্বাস দিয়ে থামিয়ে রাখতে পারব, বুঝতে পারছি না।’স্টাইলিশ কারখানার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নারী শ্রমিক জানান, তাঁরা গত মার্চ মাসের বেতন পাননি। ওই বেতন না দিয়েই গত ১ এপ্রিল থেকে কারখানা লে-অফ ঘোষণা করে বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এখন রোজা চলছে, সামনে ঈদ। গাজীপুরে করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউন চলায় দিনমজুর স্বামীও বেকার। তাঁদের ঘর ভাড়া, দোকানে বাকির জন্য নিত্যই তাগাদা শুনতে হচ্ছে। স্বামী-সন্তান নিয়ে এখন খুবই কষ্টে চলছেন। তাঁদের মতো অনেকে একই কষ্টে রয়েছেন। এমন অবস্থায় তাই করোনা ভয়কে উপেক্ষা করেই আন্দোলনে নামতে হচ্ছে।এদিকে, গাজীপুর মহানগরীর ছয়দানা হারিকেন এলাকার বিএইচএমএল সোয়েটার কারখানার শ্রমিকদের মার্চের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হয়নি। আজ বুধবার ওই বেতন দেওয়ার পূর্বনির্ধারিত তারিখ রয়েছে।বাংলাদেশ এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘বকেয়া বেতন-ভাতার জন্যই মূলত কারখানার শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য বিক্ষোভ করছে। শ্রমিক ভাইবোনেরা কষ্টে আছে। তাদের বেতন দিয়ে সংসার খরচ, বাড়ি ভাড়া, দোকানের বাকি পরিশোধ করতে হয়। এখন তাদের হাতে টাকা নেই। তাই তারা রাস্তায় নেমেছে। করোনার কারণে অনেকেরই রপ্তানির অর্ডার আটকে গেছে। বিশেষ করে ছোট কারখানাগুলো খুবই দুর্দিনের মধ্যে আছে, অর্থ সংকটে পড়েছে। তাই তাদের শ্রমিকদের বেতন আটকে গেছে। আমাদের বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ নেতৃবৃন্দ বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এ সপ্তাহে না পারলেও আগামী সপ্তাহে বকেয়া বেতনের ব্যাপারটা সেট হবে। আগামী রোববার থেকে তারা কারখানাগুলোর বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ শুরু করবে।’ এর পর আর পোশাক কারখানাগুলোতে শ্রমিক অসন্তোষ থাকবে না বলে মনে করেন তিনি। বলেন, ‘আমরা সরকারকে পরামর্শ দিয়েছি, যারা আমাদের সদস্য নয় এমন কারখানার দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।’সালাম মুর্শেদী আরো বলেন, ‘অধিকাংশ কারখানা আমাদের সংগঠনের সদস্য নয়। তাদের দায়িত্ব আমরা নেব না। সম্প্রতি আমরা সরকারকে (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈঠক) পরামর্শ দিয়েছি বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমইএর বাইরে যেসব পোশাক কারখানা আছে, সে কারখানাগুলো বন্ধ করে দিতে। এদের কারণেই টোটাল গার্মেন্টস সেক্টরে বদনাম হয় এবং আমাদের ওপর দায়িত্ব চলে আসে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর