লাইফ স্টাইফ: জাগো দেশ,ডেস্কঃ পাঠকবৃন্দ আজকের লেখাটা অত্যান্ত মনযোগ সহকারে পড়বেন। ধীরে ধীরে পড়বেন। ভেবে বুঝে পড়বেন। কারন আজকে আমি আপনার আমার আত্মহত্যা নিয়ে কথা বলবো। একটু আলোচনা করবো।তার আগে আপনাকে একটি শর্ত দিই।আপনি যদি আমার লেখাটা পড়ার জন্য আগ্রহী ও পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে থাকেন। তবে শুনুন আপনি একেবারে আমার আলোচনায় ডুবে যান।ভাবুন আমি আর আপনি টেবিলের দু প্রান্তে বসে আছি। কেউ নেই আশে পাশে।সুনশান নীরবতা।দুজনে চায়ের কাপে মুখ দিয়েছি।আর আলোচনা করছি মৃত্যুর জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকতে হবে।জন্মেছি যখন তখন মরতেই হবে। মৃত্যু নিয়ে এত ভয় করে লাভ নেই বলতেই আপনার বুকে হঠাৎ করে ব্যাথা উঠেছে। স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন আপনি।ব্রেইন স্ট্রোক। মাথায় প্রচুর রক্তক্ষরন হচ্ছে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্য আপনি নিশ্চিত মারা যাবেন।আমি প্রানপনে চেষ্টা করছি আপনাকে সাহায্য করতে। কোন কিছু করতে পারছিনা।না ডাক্তার না এ্যম্বুলেন্স কিছু নেই।আর কয়েক মিনিট হয়তো বেঁচে থাকবেন।হঠাৎ আপনার মনে পড়ে গেলো আপনার প্রিয় মা বাবা,ভাই, বোন,স্ত্রী,প্রেমিকা,বন্ধু,বান্ধবী ও সন্তানের কথা। কিছুক্ষন আগেও আড্ডা দিয়ে এসেছেন। কত স্বপ্ন হৃদয়ে সুন্দর একটা বাড়ি বানাবেন।মা, বাবা,স্ত্রী,সন্তান থাকবে। সন্তান চাকরি করবে আপনি গর্ব করে বলবেন আমার সন্তান বিসিএস ক্যাডার। এসব ভাবছেন আর বুকে হাত দিয়ে মৃত্যুযন্ত্রনায় ছটফট করছেন। আর কয়েক সেকেন্ড আছে হাতে। বুকটা ফেঁটে যাচ্ছে আপনার কষ্টে। কি করে থাকবেন কবরে।যে স্ত্রী আপনাকে একটি রাত ছাড়া একা কাটাতে ভয় পাই।সন্তানরা না দেখলে আব্বু করে চিৎকার করে। মা বাবা পথ চেয়ে বসে থাকে কখন সন্তান আসবে। কেবল একটু সুখের সন্ধান পেয়েছেন আর সেই মুর্হুর্তে পাড়ি দিচ্ছেন পরপারে।কি হবে। কি করে স্ত্রী সন্তানদের মানুষ করে তুলবেন। মা বা কি করে সন্তান ছাড়া থাকবেন। ভাবছেন আর গায়ের রোম শিহরে যাচ্ছে।কিন্তু কিছুই করার নেই মরতে তো হবেই।ভাবছেন যদি সব সহায় সম্বল দিয়েও আর কয়েক বছর বাঁচা যেতো তবে তাই করতেন। আরো কয়টা বছর স্ত্রী,সন্তান,মা বাবা বন্ধু,বান্ধব সকলকে নিয়ে হৈহুল্লর, করে, নামায কালাম পড়ে কাটাতেন। এটা বললাম স্বাভাবিক মৃত্যুর কথা।আচ্ছা আমরা যদি এমন মৃত্যুকালে এমন ভাবে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি।আরো কিছু সময় চাই।তবে আমরা কেন এখন সব জেনে সেচ্ছায় মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছি।কেন নিজের কথা,পরিবার পরিজন মা,বাবা,ভাই,বোন, সন্তান,বন্ধু,বান্ধবীর কথা ভাবছিনা। কেন আমরা এ করোনা ভাইরাসের সময় নিজেরা ঘর থেকে বের হয়ে সেচ্ছায় মরনের দিকে নিজেকে সমর্পন করছি।একবার দুচোখ বন্ধ করুন।অন্ধকার কবরের কথা ভাবুন।আপনার সন্তাদের কথা মনে করুন। যে সন্তান আপনাকে এক বেলা না দেখলে আব্বু আব্বু করে কেঁদে উঠে। পাগল করে দেয় সারা বাড়ি
।কান্না থামাতে পারেনা কেউ।যে শিশুটি একজনের একটা আইসক্রীম খাওয়া দেখে কান্না করে আপনার স্ত্রী আপনাকে রিং দেয় বাবু কাঁদছে তাড়াতাড়ি আইসক্রীম নিয়ে এসো।সেই সন্তানটির কথা চিন্তা করুন।আপনার একা আয়ের উপর ৬ টা মানুষ নির্ভরশীল।বাবা বিছানাগত,মায়ের ডায়াবেটিস,ভাই বোন পড়াশোনা করে,স্ত্রী গৃহিনি, ছোট বাচ্চা, আপনার অকাল মৃত্যতে কয়জন মরবে না খেয়ে। কয়জন বেছে নেবেন আত্মহতার পথ।বাধ্য হয়েই স্ত্রী নেমে পড়বেন রাস্তায়।ধর্না দেবেন চেয়ারম্যান মেম্বরদের কাছে সামান্য কিছু ত্রানের জন্য।যে স্ত্রীকে কোন দিন বের হতে দেননি।কেউ দেখেনি। তাকেও কুটুক্তি করার সাহস পাবে আপনার অনুপুস্থিতিতে। ভাবুন চোখ বন্ধ করে ভাবুন ।হ্যাঁ মরতে হবেই তবে সে মৃত্যুটা যেন আত্মহত্যা না হয়। সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।করোনা থেকে যেন আল্লাহ আমাদের সকলকে হেফাযত করেন আমারদের রক্ষা করেন সেজন্য আল্লাহর কাছে কাঁদবো।যতটা সম্ভব ঘরে থাকবো। সাদাভাত লবন দিয়ে খেয়েও।খুব কষ্ট হলে ফোন দেব সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে। ত্রানের চাল,ডাল,খেয়েই কোনরকমে কাটাবো। তবে আত্মহত্যা করবোনা। কি নিয়ে যাবেন কবরে। মরলে কিচ্ছু যাবেনা। তাই এই মুর্হুতে এত আয় করে সঞ্চয়ের চিন্তা বাদ দিন। ভাবুন কবরে যখন কিছুই নিয়ে যেতে পারবোনা। তখন না হয় এক দুমাস সাদাভাত আলু ভর্তা খেয়েই কাটিয়ে দেব।একটা কথা মনে রাখবেন যখন ভূমিকম্প,সাইক্লোন,বন্যা,টর্নেডো আসে সব কিছু লন্ডভন্ড করে দেয় মনে হয় আর কোনদিন এ পৃথিবি আর স্বাভাবিক হবেনা। পাঁচদিন,দশদিন,একমাস পর সব কিছু স্বাভাবিক হয়।আল্লাহ নিশ্চয় আমাদের প্রতি রহমত বর্ষন করবেন। আমাদের হেফাজত করবেন ও এ ভাইরাস থেকে দ্রুত পরিত্রান দেবেন