লাইফ স্টাইফ, ডেস্কঃ নুনে ভাতে বাঙ্গালী এ কথাটি আমাদের সকলের কাছে পরিচিত একটি শব্দ।নুন শব্দ আমরা এটাকে বইয়ের ভাষায় লবন বলে থাকি। বাঙ্গালী বলতে আমরা সকলে এক বাক্য বলে উঠি নুনে ভাতে বাঙ্গালী। বাঙ্গালীর খাবারের যে সংস্কৃতি তা যেন নুনের সাথে জড়িত।আপনারা আমার উপরের লেখা টুকু পড়ে মনে মনে মন্তব্য করছেন নুনে ভাতে না। হবে মাছে ভাতে বাঙ্গালী।হ্যাঁ সত্যি তো আমরা তো মাছে ভাতে বাঙ্গালী।এটা তো আমার একদম মনেই ছিলোনা।আগে নদী নালা, পুকুর ডোবায় মাছ হতো। কম দামে পাওয়া যেতো সবাই খেতো।আর এখন তো নদী গুলো ভূমিদস্যরা দখল করে চাষাবাদ করছে। নদী যেন চিকন কোন নালার মত অবস্থা। নদীর যৌবন ও নেই সেখানে মাছ তো মাছ একটা ব্যাঙ ও নেই।মাছে ভাতে বাঙ্গালী হলেও অনেকদিন হলো মাছের বাজারে যাবার সাহস করিনা মাছের যে দাম!তাছাড়া হাতে কোন টাকা পয়সাও নেই, যে সাহস করে মাছের বাজারে গিয়ে মাছ কিনে খাবো।করোনাতে তো কোন প্রকারের কাজ করতে পারছিনা।পেপার বন্ধ,বিজ্ঞাপন নিতে পারছিনা তাছাড়া করোনার লকডাউনের খবর ছাড়া কোন সংবাদও নেই। কোন প্রোগাম নেই। মিটিং মিছিল সব বন্ধ। তাই আমার আয় ও বন্ধ।কিন্তু আমি তো সাংবাদিক। আয় বন্ধ তাতে কি। ভাবটা তো আর বন্ধ রাখতে পারিনা।ঠিকই ভালো প্যান্ট,শার্ট পড়ে একটু খানির জন্য হলেও লকডাউন ভেঙ্গে বের হয় করোনায় এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি জানতে,সংবাদ সংগ্রহ করতে এবং তা পাঠকদের জানাতে ।মাছের কথা বাদ ই দিলাম।যার সাথে বাঙ্গালীর ঐতিহ্য জড়িয়ে তার দাম একটু বেশী না হলে মানাই নাকি।আপনারা হয়তো বলে বসবেন, মিয়া এই পরিস্থিতিতে এত মাছ টাছ খেতে হবে কেন। সবজি খেতে পারেন না। সবজি খান যান।আপনার কথার সাথে আমি পুরোপুরি সহমত পোষন করছি। এই পরিস্থিতিতে আমাদের মাছ খেতে হবে কেন।তারপরও টিভিতে দেখি যখন মন্ত্রী মহোদয়রা বলেন আপনারা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করুন।বেশী বেশী মাছ,ডিম,মাংশ খান।উনাদের কথা শুনে মনে হয় ঈদের উৎসব চলছে আর আমাদের মত পা ফাটা মানুষদের কেউ মাছ,ডিম,মাংশ ফ্রী দিচ্ছেন। আর আমরা ভাত ছাড়া এসব খেয়েই শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছি। এবার আসি আপনাদের পরামর্শে সবজি খাওয়ার কথায়। তবে সবজির বাজারে যে আমি একা যায় তা কিন্তু না।আপনারাও যান নিশ্চয়। আমি যদি মিথ্যা বলি তবে কমেন্টেসে জানাবেন আমার কোন কথাটা মিথ্যা। আচ্ছা বলুন তো সবজি বাজারে গিয়ে যদি একটু পেঁয়াজ,একটু ঝাল,রসুন,আলু,পটল কলা,বেগুন নেওয়া যায় তাহলে কত টাকা বিল হবে।৪ জনের জন্য যদি এই কয়টা পদেরই সবজি বাজার করা হয় তিনদিনের তাহলে কমপক্ষে ৪ শত টাকা পড়বে। তাহলে বর্তমান সময়ে কোন ব্যাক্তি আছেন সরকারের দেওয়া ১০ কেজি চাল নিয়ে ৪ শত টাকার বাজার করার ক্ষমতা রাখেন। কারো তো আয় ই নেই। তো বাজার করবে কি দিয়ে।২৫ টাকার পেঁয়াজ এক লাফে ৭০ টাকা। কেউ আছেন বাজার মনিটরিং করার মত। যারা মজুতদার শত শত মন পেঁয়াজ,রসুন,কিনে গুদামজাত করে কৃত্তিম সংকট তৈরী করে লক্ষ লক্ষ টাকা কয়েক সপ্তাহে কামিয়ে নিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেবার।পেঁয়াজের বাজারে যে পরিস্থিতি ছিলো যদি এ ভাইরাসটি না আসতো তবে ১৫ টাকা করে কেজি হতো। পেঁয়াজের কোন সংকট নেই। মুনাফালোভীরা শুধু সুযোগটাকে কাজে লাগাচ্ছেন। বেগুন,পটল, চিচিঙ্গা,বরবটি,ঢেড়স,মিষ্টি কুমড়া,শসা,পেঁপে কোন সবজিটি নেই তাঁর দাম আকাশচুম্বি।মানুষ নীরবে খেয়ে আসছে। কিন্তু এই করোনাতে আর কিছুই করার নেই। অনেকে বাজারে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন সবজি কিনতে। কারন তারা ভালো করেই জানেন ২ শত টাকা আনলেও বাজার করা হবেনা।আগে যারা গরীব ছিলো যারা ঠিকমত বাজার করতে পারতেন না তারা সাদা ভাত,সরিষার তেল,পেঁয়াজ একটু বেশী করে কেটে লবন মাখিয়েই মাংশ মনে করে তৃপ্তি করে খেতেন।পেঁয়াজের যে ঝাঁজ তাতে পেঁয়াজ ছাড়া কিভাবে খাওয়া যায় সে পথ ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই।অনেকে আমার মত ভাবছেন পেঁয়াজ ছাড়া সাদা ভাত,আলু সিদ্ধ দিয়েই লবন মাখিয়ে চালিয়ে দেওয়া যাক। তবে সেটাও আর বেশীদিন হবেনা হয়তো। সবজির বাজারে লাগাম টানা না গেলে অনেক পরিবারকে শুধু ভাত আর লবন মেখেই খেতে হবে পেঁয়াজ ছাড়া।সংশ্লিষ্ট কৃতপক্ষের কাছে আকুল আবেদন আমাদের মাছের কাঙ্গালী করেন,ডিমের কাঙ্গালী করেন,মাংশের কাঙ্গালী করেন তবে সবজির কাঙ্গালী করবেন না।নিয়মিত সবজির বাজার মনিটরিং করেন। যাতে করে ব্যাবসায়ীরা এই সুযোগে মানুষকে জিম্মি করে গলাকাটা দাম না নিতে পারে।আমরা চাই কৃষক ভাইয়েরা লাভবান হোন তাঁদের সবজি বিক্রি করে।তবে কৃষকের কাছে ১০ টাকায় কেনা কোন সবজি বাজারে এসে যেন ৪০ টাকা না হয় তাঁর ব্যাবস্থা করুন। আমরা এক মুঠো সাদা ভাত একটু সবজি দিয়ে খেতে চাই।তরকারিতে একটু প্রয়োজন মতো পেঁয়াজ দিতে চাই।কিছু না পারেন অন্তত ভাতের সাথে লবন আর পেঁয়াজ মাখিয়ে যাতে খেতে পারি সেই ব্যাবস্থাটুকু করুন।