রোববার সকালের দিকে দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্তের প্রেক্ষাপটে সব স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ চেয়ে হাইকোর্ট রিট করা হয়। এ রিটে দেশের স্থল-নৌ এবং বিমানবন্দরও বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবি উঠেছিল। ৮ মার্চ ৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগীর কথা জানালেও গতকাল শনিবার দুপুরে আইইডিসিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশে এখন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী নেই। যে তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের সবাই এখন করোনামুক্ত। পরে রাতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালিক জানান, দেশে আরও দুজন আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন আক্রান্ত দুজনের একজন ইতালি থেকে এবং অন্যজন জার্মানি থেকে সম্প্রতি দেশে এসেছেন।
রোববার সকালে ইতালি থেকে আরও ১৫২ জন দেশে এসেছেন। তাদের এখনও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়নি। তারা হজক্যাম্পে আছেন। তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। দেশে করোনার রোগী শনাক্তের পর বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠে স্কুল-কলেজ বন্ধের। এ পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞদের মতের ভিত্তিতে স্কুল কলেজ বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল গত সোমবার (৯ মার্চ) বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে সোমবার সকালে উপমন্ত্রী বলেছিলেন, স্কুল-কলেজ বন্ধ করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ লাগবে। এ খবর বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ শাখা থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়।
এতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির বরাত দিয়ে বলা হয়, ‘করোনা মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বিষেশজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে স্কুল
কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সচেতনতামূলক নির্দেশনা পাঠানো হচ্ছে।’ প্রসঙ্গত, চীনের উহান থেকে বিস্তার শুরু করে গত
আড়াই মাসে বিশ্বের ১৪৫টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। চীনে করোনার প্রভাব কিছুটা কমলেও বিশ্বের অন্য কয়েকটি দেশে এর প্রকোপ দেখা দিয়েছে। রোববার পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় নিহত হয়েছেন ৬ হাজার ৫১৫ জন। অপরদিকে ৭৭ হাজার ৭৫৩ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৬৯ হাজার
৫৩৩ জন। এই ভাইরাসে শুধুমাত্র চীনের মূল ভূখণ্ডেই আক্রান্ত হয়েছেন ৮০ হাজার ৮৬০ জন। আর মারা গেছেন ৩ হাজার ২১৩ জন। তবে এখন চীনে এই হার
উল্লেখযোগ্য হারে কমে এসেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনাভাইরাসে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ জন এবং নিহত হয়েছেন ১৪ জন।